ডায়াবেটিস সচেতনতা দিবস উপলক্ষে আসুন প্রত্যেকে সচেতন হই এবং ডায়াবেটিসকে প্রতিরোধ করি। ডায়াবেটিস একটি বিপাকজনিত রোগ। এই রোগ জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত জীবন সাথী হয়ে থাকার মতো রোগ। আসুন খুব ভালো করে আগে রোগটি সম্পর্কে নিজে পরিষ্কারভাবে জেনে নিন কিভাবে রোগটি প্রতিরোধ করা যাবে। প্রতিরোধের বিষয়গুলি যখন নিজে জেনে যাবেন তখন নিশ্চয়ই প্রতিরোধ ও করতে পারবেন, বংশে থাকলেও হবে না। এবং যাদের হয়ে গেছে তারা ইতিমধ্যে নিয়ন্ত্রণের কৌশলগুলি শিখে তা মানলে নিশ্চয়ই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে জটিলতা মুক্ত জীবনযাপন করতে পারবেন।
কি কি কারণে ডায়াবেটিস হতে পারে:
১। বংশগত বা পারিবারিক পারিপার্শ্বিক কারণ
২। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন অর্থাৎ উচ্চ-ক্যালরী যুক্ত খাবার বেশি খাওয়া
৩। কায়িক পরিশ্রমের অভাব যাদের
৪। অতিরিক্ত ওজন বা ওবিসি যাদের
৫। যাদের দেহে মেদের পরিমাণ বেশি
৬। দীর্ঘদিন যাবত যারা কটিসোল জাতীয় ঔষধ সেবন করেন
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের উপায়:
৩টা ’D’ এবং ২টা ’E’
এই উপায় ডায়াবেটিস চিকিৎসার জনক ডাক্তার মো. ইব্রাহিম ( বারডেম হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ) তিনিই বলে গেছেন। সম্প্রতি যোগ করা হয়েছে এস এম বিজি অর্থাৎ ( সেলফ মনিটরিং অব ব্লাড গ্লুকোজ )
১ম ’D’ অর্থাৎ ডায়েট বা খাদ্য ব্যবস্থা
২য় ’D’ অর্থাৎ ডিসিপ্লিন বা শৃঙ্খলা
৩য় ’D’ অর্থাৎ ড্রাগ বা ওষুধ
৪র্থ ’E’ অর্থাৎ এডুকেশন ডায়াবেটিস
৫ম ’E’ অর্থাৎ এক্সারসাইজ বা মিক্সার ব্যায়াম
এখন আমরা ১ম ’D’ অর্থাৎ ডায়েট নিয়ে কথা বলবো। ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েট কেমন হওয়া উচিত? সাধারণ মানুষের এবং নন ডায়াবেটিক ব্যক্তির খাবারের সাথে কোন পার্থক্য থাকবে কি ? ডায়াবেটিস হওয়ার পর চিকিৎসার প্রথম ধাপ খাদ্য ব্যবস্থা মেনে চলা। কারণ ডায়াবেটিসে রক্তে যে চিনি/শর্করা বাড়ে তা আসে খাবার থেকে। তাই খাদ্য ব্যবস্থা এমন হতে হবে রোগী যেন সঠিক পুষ্টি পায়, কাজ করার জন্য শক্তি পায় কিন্তু রক্তে চিনি যেন না বাড়ে অর্থাৎ ডায়াবেটিস যেন না বাড়ে। সেজন্য তিনটি নিয়ম মানা খুবই জরুরি।
১। খাদ্যের ধরন
২। খাবারের সময় এবং
৩। খাবারের পরিমাণ
ডায়াবেটিক এবং নন ডায়াবেটিক ব্যক্তির সুস্বাস্থ্য রক্ষায় সুষম খাদ্য খেতেই হবে। ক্যালরির কোনো পার্থক্য হবে না। শুধু খাদ্যের ধরনের পার্থক্য হবে।
যে ৫ টি ভুল ডায়াবেটিক রোগী প্রতিনিয়ত করে:
১। সর্বদা চিন্তা করে কম খাবার গ্রহণ করতে হবে।
২। অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকা
৩। বিভিন্ন অজুহাতে ব্যায়াম না করা।
৪। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই ওষধ সেবন করা এবং
৫। ফলো-আপ বা মাসিক সময়ে অথবা নির্দিষ্ট সময়ে ডাক্তারের শরনাপন্ন না হওয়া।
আশা করছি উপরের নিয়মগুলি মেনে চললে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থ জীবনযাপন করা সম্ভব হবে।
নিষেধ:
চিনি, গুড় (এসব দিয়ে তৈরি খাবার) মধু, গ্লুকোজ, রস (আঁখের, তালের, খেজুঁরের) কোল্ড ড্রিংক্স, জুস, জ্যাম-জেলি ইত্যাদি।
লেখক: ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট; ল্যাব এইড লিমিটেড ( ডায়াগনস্টিক চট্টগ্রাম ), পার্কভিউ হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক লিমিটেড
Leave a Reply