ব্যবসায়ীরা জানান, গত এক দিনের ব্যবধানে বেগুনের কেজি ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। কাঁচামরিচের দামও বাড়তির দিকে। এছাড়া চড়ে থাকা শসা ও লেবুর দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন ক্রেতারা।
শনিবার রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেলে রোববার থেকে শুরু হবে রোজা। মধ্যে দুই থেকে তিনদিন বাকি থাকতে বাজারে ইফতারের গুরুত্বপূর্ণ এসব উপকরণের দর বাড়ছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বেশ কয়েকটি খুচরা বাজারে গিয়ে দেখা যায় লম্বা বেগুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। ২৫০ গ্রাম কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা, আর কেজি ১০০ টাকা। এক হালি লেবু আকার ও মান ভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা এবং শসা ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, গত এক সপ্তাহ আগে বেগুন বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে, ২৫০ গ্রাম কাঁচামরিচ ২০ থেকে ২৫ টাকা, লেবু ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকা বিক্রি হয়েছে।গত দু’এক দিন ধরে কাঁচা এসব সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে। রোজায় দাম আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন ক্রেতা এবং বিক্রেতারা।
রামপুরা কাঁচা বাজারের সবজি বিক্রেতা শাহ জালাল জানান, গত এক দিনের ব্যবধানে বেগুন কেজিতে ১৫ টাকা বেড়েছে। বুধবার যে বেগুন ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে, তা বৃহস্পতিবার ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
“রাইতে পাইকারি বাজারে গিয়া দেহি বেগুনের দাম বাইড়া গেছে। দুই-একদিনের মইধ্যে আরও কয়েকটা সবজির দাম বাইড়া যাইতে পারে। যেহেতু রোজা শুরু হইতাছে দাম তো বাড়বই, এইটা আগের অভিজ্ঞতা থেইকা কইতাছি।”রোজা শুরু হলে এসব জিনিসের দাম কেন বাড়ে, জানতে চাইলে সবজি বিক্রেতা শাহ জালাল বলেন, “রোজাদাররা সারাদিন রোজা রাইখা ক্লান্ত হইয়া যান, ইফতার একটু স্বাদ কইরা খাইতে চান। লেবু, শসা, কাঁচামরিচ সবসময় হিসাব কইরা কিনলেও রোজার সময় সবাই এইসব কিইন্যা থাকেন। তাই চাহিদা বেড়ে যায় বলে দামও বাড়ে।”
মালিবাগ কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী মো. সোহেল বলেন, “বাজারে লেবু পাওয়া যাচ্ছে না, যা আসে দাম বেশি কিন্তু রস কম। বৃষ্টি না হওয়ায় লেবুতে রস নাই, তাছাড়া বাজারে প্রয়োজনীয় পরিমাণ লেবু আসতেছে না।”
তিনি বলেন, “বৃষ্টি না হলে রোজায় লেবু পাওয়া কষ্টকর হবে, এমনিতেই দাম বেশি, দাম আরও বেড়ে যেতে পারে।”
কারওয়ানবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান জানান, পাইকারি দরে কাঁচামরিচের পাল্লা (৫ কেজি) ৩০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। শসার পাল্লা ২০০ টাকার মধ্যে, বেগুন ৩০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
তিনি বলেন, “রোজা শুরু হলে এগুলোর চাহিদা বাড়বে, তখন দাম কিছুটা বাড়বে। মোকাম থেকে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ সরবরাহ থাকে তাহলে দাম অতিরিক্ত বাড়বে না বলে মনে হয়।”
নগরীর মগবাজার এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, “আমাদের দেশের কালচার হল- রোজা শুরু হলে সব জিনিসের দামই বেড়ে যায়, বিশেষ করে ইফতারের প্রয়োজনীয় পণ্যের দামে আগুন লাগে!“ইফতারে বেগুনীর প্রয়োজনীয়তা একটু বেশি বলে এর দাম তখন দুই থেকে তিন গুণ বেড়ে যায়।”
দাম যাতে মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে সেজন্য বাজারে নজরদারি দাবি করে তিনি বলেন, “যে ব্যবসায়ীরা কোনো কারণ ছাড়া জিনিসের দাম বাড়ায় সরকার যদি তাদেরকে কঠোর নজরদারির মধ্যে রাখে, নিয়মিত কৃষক পর্যায় থেকে শুরু করে পাইকারি ও খুচরা বাজার পর্যন্ত মনিটরিংয়ে রাখা হয় তাহলে মানুষ কিছুটা হলেও স্বস্তিতে থাকবে।”
কাঁচামরিচ-শসাসহ অন্যান্য সবজি উৎপাদনের অন্যতম প্রধান জেলা বগুড়ায় এবার এসবের ফলন ভাল হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. দুলাল হোসেন।
“এ অঞ্চলে এবার ফলন বেশ ভাল হয়েছে, রোজায় দাম সহনশীল পর্যায়ে থাকবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।”
বৃহস্পতিবার বগুড়ায় খুচরা পর্যায়ে কাঁচামরিচের কেজি ৭০ টাকা এবং শসা ৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা
Leave a Reply